সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

জাতীয় পার্টির চার অংশ এক মঞ্চে, নেই জিএম কাদেরের জাপা

এইচ এম এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় জাতীয় পার্টির চারটি অংশের নেতা ও সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া নেতারা এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তবে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির কোনো নেতা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।

‘পল্লিবন্ধু এরশাদ স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠন এই স্মরণসভার আয়োজন করে। এর উদ্যোক্তা ছিলেন জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টি থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া তিন জ্যেষ্ঠ নেতা: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নু। সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জাতীয় পার্টি (রওশন এরশাদ), জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও জাতীয় পার্টি (মতিন)-এর নেতারাও এতে অংশ নেন। আয়োজকরা জানান, বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা এই স্মরণসভায় একত্রিত হয়েছেন। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “নির্বাচন চাই, তবে যেনতেন নির্বাচন নয়। আগে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা জুলাই আন্দোলন করেছিল, তারা ভেবেছিল বাংলাদেশ বদলে যাবে। কিন্তু আজ আইনশৃঙ্খলার অবস্থা কী? সোহাগের (লাল চাঁদ) হত্যার মতো নির্মম ঘটনা আইয়ামে জালিয়াতেও ঘটেনি।” তিনি দাবি করেন, গত এক বছরে ১৪০০ মানুষ খুন হয়েছে, যার মধ্যে ১২৪ জন রাজনৈতিক কারণে। তিনি প্রশ্ন করেন, “তাহলে কী পরিবর্তন হলো?” তিনি বলেন, “এই অস্থির সময়ে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।” আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, “আমাকে বলা হয় আমি দল ভেঙেছি। কিন্তু আমি ভাঙিনি, দল আমাকে বের করে দিয়েছে। আমি আন্দোলন করে এরশাদকে মুক্ত করেছিলাম। আজ যে বৃহত্তর ঐক্যের কথা শুনছি, তা বাস্তবায়ন হলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে।” তিনি বলেন, এরশাদকে স্বৈরাচার বলা হতো, কিন্তু ৫ আগস্টের পর এখন আওয়ামী লীগকে স্বৈরাচার বলা হচ্ছে। এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “আসুন, আমরা জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করি। দেশে আবারও পরিবর্তন আসবে। আমরা জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করব।” সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মুজিবুল হক চুন্নু অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেন, “৪৫ বছরে আমাদের অনেক ভুল হয়েছে। আমরা দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।” তিনি জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গঠনের আশা প্রকাশ করেন। জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, “যারা বিপ্লব নিয়ে ঠাট্টা করেন, তারা বিপ্লব করেননি, দেখেননি। আমরা বাংলাদেশের জন্য লড়েছি। আপনি কোথাও ছিলেন না, শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন।” অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শেখ শহিদুল ইসলাম, জাফর আহমেদ জয়, দিদারুল আলম চৌধুরী, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, গোলাম সারোয়ার মিলন, নাজমা আক্তার, জিয়াউল হক মৃধা, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন খোকা, সাহিদুর রহমান টেপা, মোস্তফা আল মাহমুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখ।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.