শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

জনগণের টাকায় বিলাসিতা বিশ্বাসঘাতকতা: নীলা ইস্রাফিলের প্রতিক্রিয়া

 জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারোয়ার তুষারের বক্তব্যের জবাবে দলের আরেক নেত্রী নীলা ইস্রাফিল বলেছেন, জনগণের টাকায় বিলাসিতা করা কোনো রাজনৈতিক অর্জন নয়, বরং এটি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। শুক্রবার (২২ আগস্ট) তিনি নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি গণমাধ্যমের পোস্টকার্ড শেয়ার করে এ মন্তব্য করেন। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন:

“অবশ্যই যাওয়া যায়, কিন্তু সেটা হতে হবে ব্যক্তিগত আয়ে অর্জিত টাকায়, জনগণের ঘামঝরা করের টাকায় নয়। জনগণের টাকায় বিলাস করা কোনো রাজনৈতিক অর্জন নয়, বরং জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নামে যারা জনগণের অর্থ অপচয় করে ব্যক্তিগত সুনাম বা বিলাসিতা বাড়াতে চান, তারা প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার চেতনাকে হত্যা করেন।”
তিনি আরও বলেন, “সত্যিকারের নেতৃত্ব মানে জনগণের সম্পদের পাহারাদার হওয়া, তাদের ঘামের টাকাকে মর্যাদা দেওয়া। যদি কেউ হাঁসের মাংস খেতে পাঁচ তারকা হোটেলে বন্ধুদের নিয়ে যান, যেতেই পারেন, কিন্তু সেটা যেন নিজের কষ্টার্জিত আয়ে হয়। তাহলেই সম্মান থাকে, জনগণের কাছে আস্থা থাকে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের মর্যাদা জনগণের টাকায় নয়, বরং জনগণের স্বার্থ রক্ষার মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়।”

নীলা ইস্রাফিল প্রশ্ন তুলে বলেন, “যে উপদেষ্টা নিজের সামান্য বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খায়, সে কীভাবে ৫/৬ জনকে নিয়ে ওয়েস্টিনের মতো ফাইভ স্টার হোটেলে হাঁসের মাংস খায়? এ খরচটা কি তার ব্যক্তিগত উপার্জন দিয়ে, নাকি জনগণের ঘামের টাকায়? জনগণের টাকায় বিলাসিতা করলে সেটা উপদেশ নয়, সেটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। যে দেশের সাধারণ মানুষ এক মুঠো ভাতের জন্য লড়াই করে, সেখানে উপদেষ্টারা ফাইভ স্টারের টেবিলে হাঁসের মাংস চিবিয়ে রাজনীতির আড্ডা দেবে, এটা লজ্জাজনক, এটা বিশ্বাসঘাতকতা।”
এর আগে, গত ১৫ আগস্ট সারোয়ার তুষার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, কোনো রাজনৈতিক অর্জন ছাড়াই পার্থ সাহেব ওয়েস্টিনে যেতে পারবেন, কিন্তু গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে হাসিনা ও আওয়ামীমুক্ত করে নতুন সরকার গঠন করে দুটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও আসিফ সাহেব ওয়েস্টিনে যেতে পারবেন না। যেতে হলে পার্থ সাহেবদের ক্লিয়ারেন্স লাগবে। তিনি আরও লিখেছেন, “আগে ক্যান্টিনে ভাত খুঁজত, আর এখন ওয়েস্টিনে হাঁস খোঁজে—যেন এর মাঝখানে কিছু ঘটে নাই।”

সারোয়ার তুষারের মতে, পার্থ সাহেব মানতে পারছেন না যে কোনো পারিবারিক লিগ্যাসি ছাড়া একজন ছাত্রনেতা বাংলাদেশের মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের সাধারণের ছেলেমেয়েরা কেন রাষ্ট্র চালাবে? রাষ্ট্র চালাবেন পার্থ সাহেবের বাবা এবং সেই পারিবারিক সূত্রে পার্থ সাহেব।” তিনি আরও বলেন, “আপনারা চান বারবার নব্বই ঘটুক, ছাত্রদের বুকের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দিক সামরিক স্বৈরাচার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করুক ফ্যাসিবাদী গণহত্যাকারী। ছাত্ররা কেন ক্ষমতার হিস্যা বুঝে নেবে? তারা আজীবন ক্যান্টিনের পাতলা ডাল খাবে আর গণরুমের নির্যাতনের শিকার হবে।”

তিনি পার্থ সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনার বক্তব্যে দগদগে শ্রেণিঘৃণা। কিন্তু আপনাদের শ্রেণি উত্তরণ কীভাবে ঘটল, সেইটা ঘাঁটাঘাঁটি করলে বড় অপ্রিয় সত্য বের হয়ে আসে।”


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.