জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন নীলা ইস্রাফিল। সোমবার (২৮ জুলাই ২০২৫) তিনি এ ঘোষণা দেন। এরপর দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “নীলা ইস্রাফিল এনসিপির কেউ নয়। তবে তিনি নাগরিক কমিটিতে ছিলেন।” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নীলা ইস্রাফিল দলের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন এবং দলীয় নৈতিকতা ও আচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
নীলা ইস্রাফিল সোমবার রাতে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, “আজ যখন আপনাদের নেতার অপরাধ, অনাচার এবং লিপ্সার বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি, তখন আমি আপনাদের কেউ না? এত দিন আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার ত্যাগ আপনাদের পক্ষে ছিল তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না! আপনারা কি দল করেন, নাকি কেবল ক্ষমতা আর নারীকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলার একটা কারখানা চালান?”
তিনি আরও বলেন, “আপনাদের অপরাধ ঢাকার জন্য আজ আমাকেই অস্বীকার করছেন? সত্য বললেই কি নারীকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়? এটাই কি আপনাদের নৈতিকতা? এই প্রশ্ন আজ শুধু আমার না, এই প্রশ্ন প্রতিটি নারীর, যাকে আপনারা দলীয় পরিচয়ে ব্যবহার করেছেন, আর পরে ‘অপরিচিত’ বানিয়েছেন।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “আপনারা কি আমাকে সত্যিই কখনো অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, নাকি কেবল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতেন?”
নীলা ইস্রাফিল আরও উল্লেখ করেন, “আমার কণ্ঠ যখন আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো ‘আমাদের নেত্রী’, ‘আমাদের শক্তি’ বলে গলা ফাটাতেন। এখন যখন আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি, তখন ‘সে তো আমাদের কেউ না’? এটা কি কোনো রাজনৈতিক দলের মূল্যবোধ? নাকি এটি প্রমাণ করে, দল নয়, আপনারা ব্যক্তি রক্ষায় ব্যস্ত? জনগণ দেখছে, বুঝছে এবং প্রশ্ন করছে এই দল কি আদৌ জনগণের ন্যায় ও নৈতিকতার প্রতিনিধিত্ব করে?”
তিনি বলেন, “আমি অবাক হই না যে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি আমাকে অস্বীকার করছে। কারণ সত্য বললেই অনেক সময় আপনজনই মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু আমি একটিই প্রশ্ন করতে চাই—যদি আমি আপনাদের কেউ না হয়ে থাকি, তাহলে আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার মাঠের উপস্থিতি এতদিন আপনারা কেন ব্যবহার করেছেন? একজন নারী যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখনই তাকে দলহীন, আশ্রয়হীন প্রমাণ করতে পারাটাই কি রাজনীতির নতুন রীতি? আমি কারো পরিচয়ে নই, আমি আমার ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো একজন মানুষ। আমাকে অস্বীকার করে সত্যকে অস্বীকার করা যাবে না।”