আজ বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের ফেসবুক পেজে তিনি এই বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে তিনি জানিয়েছেন যে, ৫ আগস্ট ঢাকার বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর আগে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে (৫ আগস্ট) কক্সবাজার সফরের কারণে দলের পক্ষ থেকে তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।
হাসনাত আবদুল্লাহ তার নোটিশের জবাবে বলেন, "৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জানতে পারি যে, আমাদের আন্দোলনের আহত ও নেতৃত্বদানকারী অনেক ভাই-বোনকে এই অনুষ্ঠানে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি আমার কাছে শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিক ব্যর্থতা মনে হয়েছে, তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।"
তিনি আরও বলেন, "যেখানে ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন, শহীদ এবং আহতদের পরিবর্তে কিছু মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর কথা প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, সেখানে উপস্থিত থাকার কোনো ইচ্ছা বা প্রয়োজন আমি বোধ করিনি।"
হাসনাত আবদুল্লাহ জানিয়ে দেন যে, ৪ আগস্ট রাতে তিনি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু তাকে না পেয়ে পরবর্তী সময়ে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে বিষয়টি জানানো হয়। নাসীরুদ্দীন তাকে নিশ্চিত করেন যে, তিনি আহ্বায়ককে বিষয়টি জানিয়েছেন এবং আহ্বায়ক এতে সম্মতি দিয়েছেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, "বিমানবন্দর থেকে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপের ছবি ও ভিডিও করে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা গণমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছে।" তিনি জানান, কিছু গণমাধ্যম ও গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশে তাদের কার্যক্রমকে অপরাধপ্রবণ ও সন্দেহজনক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা হয়েছে। "এমনকি গুজব ছড়ানো হয়েছে যে, আমরা পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠকে যাচ্ছি, যদিও তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন না," উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারার বিরুদ্ধে পরিচালিত ‘স্লাট শেমিং’-এর ঘটনায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এটি ছিল "সবচেয়ে দুঃখজনক ও নিন্দনীয়" ঘটনা। তিনি বিশ্বাস করেন, এর উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে রাজনীতিতে অংশ নিতে আগ্রহী নারীদের নিরুৎসাহিত করা।
হাসনাত আরও বলেন, "গোয়েন্দা সংস্থা ও কিছু গণমাধ্যমের এই ধরনের আক্রমণ কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।" তিনি মনে করেন, এনসিপির পক্ষ থেকে এই সব অপরাধপ্রবণ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল, তবে দল তা করেনি।
তিনি শেষদিকে বলেন, "দলের বিরুদ্ধে শোকজ করার উদ্দেশ্য ছিল মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব উসকে দেওয়া। আমি দলের কোনো আইন লঙ্ঘন করিনি, তাই শোকজ দেওয়া এবং গণমাধ্যমে তা প্রকাশ করার রাজনীতি কতটুকু প্রজ্ঞাপূর্ণ ছিল, সে বিষয়ে গভীরভাবে ভাবা উচিত।"
এনসিপির প্রতি তার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও গণতান্ত্রিক সহনশীলতার মাধ্যমে আমাদের দল রাজনৈতিকভাবে আরও পরিণত হবে।"