বিএনপি, যিনি গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে রাজপথের আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন, তাদের জন্য এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জাতীয় সরকার গঠনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলটিকে রাজনীতির অভিভাবকের ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্বাচনের মাঠে বিএনপি বেশ এগিয়ে রয়েছে। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা সারা দেশে সংসদীয় আসনগুলোতে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, বড় দল হিসেবে প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে দুই দফা জরিপ সম্পন্ন হয়েছে, এবং তৃতীয় দফার জরিপ চলছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৭০-৮০ জন সিনিয়র ও জনপ্রিয় নেতার প্রার্থিতা প্রায় নিশ্চিত। বাকি আসনগুলোতে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে হাইকমান্ডের নির্দেশে জরিপের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই চলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক হবে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় ভোটারদের মন জয় করা প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। গণ-অভ্যুত্থানের পর ভোটাররা যোগ্য, সৎ ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী চান। ফলে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করলে ফলাফল ওলট-পালট হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, “এবার নির্বাচনি প্রচারে নতুনত্ব আসবে। সামাজিক মাধ্যম ব্যাপক প্রভাব ফেলবে, যা নিয়ন্ত্রণের কাঠামো এখনো তৈরি হয়নি। প্রার্থীদের গণমানুষ ও তারুণ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, রাজপথের আন্দোলনে ভূমিকা, সততা ও যোগ্যতা প্রাধান্য পাবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, “দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সব সংসদীয় আসনে প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন। বিএনপি পুরোদমে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।” দলটি সমমনা দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জন্য কিছু আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।
বিশ্লেষকরা আরও বলেন, গত এক বছরে রাজনৈতিক মাঠ উন্মুক্ত হয়েছে। এই উন্মুক্ত মাঠে প্রার্থীদের যোগ্যতা, নেতৃত্ব, ভিশন ও দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ হবে। দলের গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও অগ্রহণযোগ্য প্রার্থীর কারণে ফলাফল প্রত্যাশিত নাও হতে পারে। তরুণ ভোটারদের আকর্ষণ করতে এবং গণ-অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ঐক্য ধরে রাখতে বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্কতা ও নতুনত্ব প্রয়োজন।