শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

ফাতেমা খানম লিজার রাজনীতি ত্যাগের ঘোষণা: নারী নেত্রীদের বিরুদ্ধে নোংরামি ও কুৎসার অভিযোগ

 বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত পৌনে ১১টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এই ঘোষণা দেন। প্রায় ১৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের এই লাইভ ভিডিওতে তিনি নারী নেত্রীদের প্রতি সংগঠনের ভেতর থেকে হওয়া নোংরামি ও কুৎসার অভিযোগ তুলে ধরেন।

লাইভে আবেগঘন কণ্ঠে ফাতেমা বলেন, “চট্টগ্রামে যাদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছি, তারাই আজ নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বয়ান তৈরির চেষ্টা করছেন। নারীদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। এগুলো আর নেওয়া যায় না। আমার দ্বারা আর রাজনীতি করা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামে একসময় অনেক মেয়ে রাজনীতিতে ছিল। আজ তারা হারিয়ে গেছে। আজ আমাকে নিয়েও নোংরামি শুরু হয়ে গেছে। শুধু আমাকে মাইনাস করার জন্যই একের পর এক বাজে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে।”

ফাতেমা অভিযোগ করেন, “কিছু ভাই-ব্রাদার কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর এক কোরাম বানিয়েছেন। এর দায় তাদের নিতে হবে।” তিনি নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা যারা বড় ভাই, যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, প্লিজ এসব বন্ধ করুন। মেয়েদের নিয়ে এই নোংরামি থামান।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে, তাদের চাওয়া-পাওয়ার কাছে আমাদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে। আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা অনেকেই হারিয়ে গেছেন। এখন বলতে গেলে কেউই আর নেই।” তিনি জানান, নিজ সংগঠনের ভেতর থেকে নারীদের প্রতি এই বৈষম্য এবং হেয় প্রতিপন্ন করার ঘটনা তাকে রাজনীতি ছাড়তে বাধ্য করেছে।

এর আগে, গত ১৭ মে ফাতেমা খানম লিজার বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে তিনি এই অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ২৪ মে সাংগঠনিক বিবেচনায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ফাতেমা লিখেছেন, “রাজনীতির অঙ্গনে কখনো শূন্যস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কেউ একটি পথ থেকে সরে দাঁড়ালে তার স্থানে কেউ না কেউ এসে দাঁড়ায়। আজ আমি, ফাতেমা খানম লিজা, আনুষ্ঠানিকভাবে জানাচ্ছি যে, আমি এই রাজনৈতিক পথ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। তবে চট্টগ্রামের নারী রাজনীতিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

ফাতেমার এই ঘোষণা এবং তার ফেসবুক লাইভ ও পোস্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে তার সাহস ও স্পষ্টবাদিতার প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। এই ঘটনা চট্টগ্রামের রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.