রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

জি এম কাদেরের তীব্র সমালোচনা: ‘দেশে নব্য ফ্যাসিবাদ, বিরোধী কণ্ঠ রোধ করছে সরকার’

জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “ভজকটভাবে দেশ চলছে। কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না, কে দেশ চালাচ্ছে? সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার আছে। সেই সরকারই নাকি দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। পরে দলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জি এম কাদের বলেন, “সরকারি দলও নাকি অনেকগুলো দাঁড়িয়ে গেছে। কোনো নিবন্ধন নেই, এমন দলের কিছু অংশ সরকারে, আর কিছু অংশ বাইরে আছে। তারা সরকারি দলের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। তাদের বক্তব্য ও বিবৃতি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করছে।” তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো বড় দলগুলোও সরকারি দলের মতো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। এমনকি এমন কিছু ছোট দল, যারা কখনো নির্বাচন করেনি বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেনি, তারাও সরকারি সুবিধা ভোগ করছে।

দেশে কার্যত বিরোধী কণ্ঠস্বর নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সরকারি দলগুলোর বাইরে যেসব দল আছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়ে রহস্য রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বেশির ভাগ মানুষ কি এই কয়েকটি দলের সমর্থক? সবাই কি এই দলগুলোকেই ভোট দেবে? দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ এই সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরোধী।”

জাতীয় পার্টিকে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, “এ কারণেই জাতীয় পার্টির ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন চলছে। নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। সরকার জাতীয় পার্টির কণ্ঠ রোধ করতে চায়।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকারও বিরোধী কণ্ঠস্বর সহ্য করতে পারে না। আপনারা শেখ হাসিনার মতো একই কাজ করছেন। ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছেন। এই সরকার নব্য ফ্যাসিবাদের প্রতীক।”

নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নেই দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন চেয়েছিলাম, যা দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছিল না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম, যাতে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু আমরা দেখছি, দেশে অন্যায় ও অবিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নয়। “এই সরকার প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ সব বিভাগের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। অনেককে মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। খালি পদগুলোতে নিজস্ব লোক নিয়োগ দিয়ে দলীয়করণ করা হচ্ছে। অবাধ নির্বাচনের জন্য সবাইকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।”

সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি একাংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর, সাইফুদ্দিন আহমেদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার, এমরান হোসেন মিয়া, এইচ এম শাহরিয়ার, মহসিনুল ইসলাম, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান, মেহেরুন্নেসা খান, মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ প্রমুখ। সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিনসহ অনেকে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.