আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে নিজেদের এক বছরের দলীয় কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা। তিনি বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তীব্র সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও তাদের জনসমর্থন বেশি থাকার কারণ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্কার নীতিতে চলা অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর সুনাম থাকলেও জনসমর্থন কম থাকার কারণ পর্যালোচনার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানীতে ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন প্রদত্ত প্রস্তাবনার ১ বছর: অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “গত এক বছরে আমরা নানা পথ ও মতের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি, রাষ্ট্রের সংকট গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি। কিন্তু রাষ্ট্রের সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সংস্কারে তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে আমরা দেখিনি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকারের প্রধানতম ত্রুটি হলো কাজের অগ্রাধিকার সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে না পারা। “ক্ষমতায় বসার পর তারা আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখেনি। এই সরকারের মূল দায়িত্ব চারটি—রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষা, দৃশ্যমান সংস্কার, বিচার নিশ্চিতকরণ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন। এর বাইরেও সরকারকে দাবি-দাওয়া মেটানো, আন্তর্জাতিক চাপ সামলানো এবং অসংখ্য ছোট ছোট আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছে।”
তিনি সমালোচনা করে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সবাইকে হিসাব জমা দেওয়ার কথা থাকলেও, দুঃখজনকভাবে কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ উপদেষ্টা এই হিসাব জমা দেননি। জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার ক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিসমূহের মধ্যে আজ কেন এত বিভাজন? নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকার কোনো বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেনি কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শও নেয়নি।”
এছাড়া, আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আহতদের চিকিৎসায় রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় হলেও এর সঠিক সমন্বয় হয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।”
এই আলোচনা সভায় মজিবুর রহমান মঞ্জুর বক্তব্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য স্বচ্ছতা ও সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নিজেদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।