জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীতে সংহতি সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। এতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, খেলাফত মজলিসসহ অন্তত ৩০টি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল সংহতি জানায়।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোট নিষিদ্ধের জোর দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দল শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার হতে সহযোগিতা করেছে। এখনো জাতীয় পার্টি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ, দায়ীদের শাস্তি, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল বলেন, “স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবু নূরের ওপর হামলা হচ্ছে কেন? শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে চ্যাপ্টার ক্লোজড। জাতীয় পার্টির মাধ্যমে তাকে ফেরানো যাবে না।”
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “নূরের ওপর হামলা ছিল বাংলাদেশের ওপর হামলা, গণতন্ত্রের ওপর হামলা। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে, কিন্তু তাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল এখনো রয়ে গেছে। তাদের রাজনীতি করার সুযোগ নেই।”
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে বলেন, “নূর এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে, নইলে সচিবালয় ঘেরাও করা হবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল ঐক্যের কারণে। কিন্তু এখন বিভক্তি তৈরি হচ্ছে। আমরা কোনো যেনতেন নির্বাচন হতে দেব না। তবে সংস্কার করে নভেম্বরে নির্বাচন হলে আমরা অংশ নেব।”
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ বলেন, “হাসিনার দোসররা এখনো পুলিশ-সেনাবাহিনীতে আছে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
হেফাজতে ইসলামের নেতা ও খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন বলেন, “নূরের ওপর হামলা মানে ১৬ বছরের আন্দোলনকেই আঘাত করা। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, এবার জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, “সংস্কার, বিচার ও ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চাই। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
এছাড়া জেএসডি, জামায়াত, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা, এনডিএম, এনডিপি, কল্যাণ পার্টি, ডেমোক্রেটিক লীগসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা একই মঞ্চে বসে নিজেদের মধ্যে ঐক্য জোরদারের আহ্বান জানান।