সর্বশেষ

রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ফ্যাসিবাদ রোধের লক্ষ্যে ২৬৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ফ্যাসিবাদ রোধের লক্ষ্যে ২৬৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন রোধ করার নির্বাচন। রোববার (১৭ আগস্ট) বিকালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে দলটির আমিরের ব্যক্তিগত কার্যালয় হলি উম্মাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় ধাপের দলীয় প্রার্থী তালিকা ঘোষণাকালে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুনভাবে ৪৫টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। এছাড়া, পূর্বে ঘোষিত ২২৩টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দুই ধাপে মোট ২৬৮টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে।

মামুনুল হক বলেন, “রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের পর সবার আশা ছিল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে চলে আসা দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির পরিবর্তন হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে অনেক বিষয়ে ঐকমত্য গঠিত হলেও সংসদ কীভাবে গঠন হবে, এ নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সংসদ দ্বিকক্ষীয় হবে—এটাতে ঐকমত্য হয়েছে। তবে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তে বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত এ বিষয়ে সমাধান হবে এবং নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হবে।”

তিনি আরও বলেন, “পিআর ছাড়া যদি উচ্চকক্ষ গঠিত হয়, তবে এটি মূলত একটি ‘বেকার পুনর্বাসন উচ্চকক্ষ’ হয়ে দাঁড়াবে। আমরা এ ধরনের বেকার পুনর্বাসনের জন্য কোনো কক্ষ চাই না। আমরা চাই একটি কার্যকর, সত্যিকার অর্থে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক উচ্চকক্ষ।”

মামুনুল হক জানান, “আমরা আশাবাদী, আগামী নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানের সব অংশীদার রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচন হবে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন রোধ করার নির্বাচন। আমরা লক্ষ্য করছি—ফ্যাসিবাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী জাতীয় পার্টি নতুনভাবে মাঠে নামার চেষ্টা করছে। জাতীয় পার্টির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা সব ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে আহ্বান জানাই—ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাই সচেষ্ট হোন।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদি, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, যুব মজলিসের সভাপতি জাহিদুজ্জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি মাওলানা এহসানুল হক প্রমুখ।

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর ফাঁস হওয়া অডিও: জামায়াত-শিবিরের মেরুদণ্ড ভাঙার পরামর্শ

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর ফাঁস হওয়া অডিও: জামায়াত-শিবিরের মেরুদণ্ড ভাঙার পরামর্শ

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই অডিওটি প্রকাশ করেন। অডিওতে ইনু শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দেন, “এই সুযোগে জামায়াত-শিবিরের মেরুদণ্ড ভেঙে দিন।”

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তার বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ফোনালাপের রেকর্ড একের পর এক সামনে আসছে।

অডিওতে হাসানুল হক ইনু শেখ হাসিনাকে বলেন, “আপনার ডিসিশনটা খুবই কারেক্ট হইছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনি একটু দয়া করে অ্যারেস্ট করে ফেলতে বলেন সবাইকে। তাহলে আর মিছিল করার লোক থাকবে না।” এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা রণক্ষেত্রের সাথী।”

ইনু ইন্টারনেট চালুর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইন্টারনেট চালু করতে বলেন। এটা আমাদেরই কাজে লাগবে। কারণ, আমরাও সমস্যায় পড়ছি। যদি ইন্টারনেট থাকে, তাহলে নিউজ দিয়ে মিডিয়া ফ্ল্যাড করে দিতে পারব।” জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “কীভাবে ইন্টারনেট চালু করব? ওরা ইন্টারনেট পুড়িয়ে দিয়েছে। ইন্টারনেট আমি আর চালু করতে পারব না। অন্য সরকার এসে করলে চালু করবে।”

ইনু আরও বলেন, “বাংলাদেশে আর অন্য সরকার আসবে না।” জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবির আবারও এক্সপোজড হইছে। এই সুযোগে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।” তিনি শিবিরের তালিকা করে সবাইকে গ্রেপ্তার করার পরামর্শ দেন, যাতে শেখ হাসিনা সম্মতি জানান। ইনু এর আগে বলেন, “এখন পর্যন্ত যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার সবগুলোই ঠিক আছে।”

এর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার আরেকটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়, যা গণঅভ্যুত্থানের সময়ের ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত এক বছরে শেখ হাসিনার হাফ ডজনেরও বেশি কল রেকর্ড প্রকাশ্যে এসেছে।

ডা. রুস্তম আলী ফরাজি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিলেন, পিরোজপুর-৩ আসনে হাতপাখার প্রার্থী ঘোষিত

ডা. রুস্তম আলী ফরাজি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিলেন, পিরোজপুর-৩ আসনে হাতপাখার প্রার্থী ঘোষিত

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজি চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন। শনিবার (১৬ আগস্ট) তিনি দলটিতে যোগদানের পর তাকে পিরোজপুর-৩ আসনে হাতপাখার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ডা. রুস্তম আলী ফরাজি এই আসনে তিনটি দল থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি একবার করে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, মহাজোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। তবে, সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

জানা গেছে, শনিবার ডা. ফরাজি তার অনুসারীদের নিয়ে ১৩টি বাসে করে চরমোনাই দরবারে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দলটিতে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে মুফতি রেজাউল তাকে পিরোজপুর-৩ আসনের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।

ইসলামী আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব মুফতি সৈয়দ এসাহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, ডা. ফরাজি ২০১৭ সালে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। তবে, পরে তিনি বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছিল।

পিআর ছাড়া স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াত নেতা ড. তাহের

পিআর ছাড়া স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াত নেতা ড. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া কখনোই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি জানান, যারা পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, তারা জানে নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) হলরুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, “জাতি আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আসুন আমরা সংলাপে বসি।” তিনি বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতি এই আহ্বান জানান এবং প্রধান উপদেষ্টাকে সব দলকে নিয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করেন।

ড. তাহের বলেন, “যারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, তারাই নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। তারা যেনতেন একটি নির্বাচন দিয়ে পুরোনো ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনতে চায়।” তিনি আরও বলেন, “অনেকে ভাবছেন আমরা বিভক্ত হয়ে গেছি। আমাদের মাঝে জুলাইয়ের চেতনা এখনো আছে। আমরা বিভক্ত হইনি। যারা পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, তারা জানে নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তাই তারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না।”

তিনি জানান, নির্বাচনের পরে যারা ক্ষমতায় যাবেন, তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও এর আইনি ভিত্তি দেবেন, কিন্তু এর গ্যারান্টি কোথায়? তিনি বলেন, “নির্বাচনে জেতার ও ক্ষমতায় যাওয়ার গ্যারান্টি ফ্যাসিস্ট হাসিনা দিতো। তাদের কথার মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায়।”

ড. তাহের বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে আমরা চড়ুইভাতি খেলতে যাইনি। সেখানে আমরা অনেক কিছু ছাড় দিয়েছি। ঐকমত্য কমিশনে যেসব প্রস্তাবনা ও সিদ্ধান্ত রাখা হয়েছে, নির্বাচনের আগেই সেগুলোর আইনি ভিত্তি দিতে হবে। নয়তো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।”

তিনি আরও বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি চায়। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “পিআর, সংস্কার এবং জুলাই সনদের আইনগত বিষয়ে গণভোট দিন। জনগণই এসবের সিদ্ধান্ত নেবে।”

তিনি শেষে জানান, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের আগে এবং পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলে, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করা হবে।”

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ নাশকতার চেষ্টা করছে: রুহুল কবির রিজভী

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ নাশকতার চেষ্টা করছে: রুহুল কবির রিজভী

 বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ১৪০০ শিশু-তরুণ-কিশোরের হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশে নাশকতার চেষ্টা করছে। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বিক্রি করেছেন, যার কারণে তারা তাকে আশ্রয় ও অপতৎপরতায় সহযোগিতা করছে। রবিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে জিয়া পরিষদ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “আওয়ামী Lীগের ভয়ংকর নির্যাতনেও যিনি আদর্শচ্যুত হননি, তিনি বেগম খালেদা জিয়া। তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে আপস করতে পারতেন, কিন্তু তা করলে দেশ ও জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হতো। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন, একাধিকবার নিপীড়নের শিকার হয়েও কখনো ছাড় দেননি। এরশাদ ও শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে তিনি দুঃসহ নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু জনগণের স্বার্থ ও অধিকারের প্রশ্নে অটল থেকেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার অত্যাচারেও খালেদা জিয়া কখনো কটূ কথা বলেননি। নীরবে সব সহ্য করেছেন। তাকে হুমকি দিয়েও বিচ্যুত করা যায়নি। তিনি সংযত কথা ও অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠিত। শেখ হাসিনার পতনের পর এখন আমাদের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও নৈতিকতার সীমা অতিক্রম করে কথা বলা হচ্ছে। বেগম জিয়ার মহত্ব ও রাজনীতি আমাদের শক্তি জোগায়।”

রিজভী উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়া জনগণের প্রতি ওয়াদা থেকে কখনো সরেননি। তিনি অবৈধ নির্বাচনে অংশ নেননি এবং আদর্শে অটল থেকেছেন। তিনি বলেন, “বেগম জিয়ার কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এখনো অক্ষুণ্ণ। আমাদের শক্তি জনগণ, বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থের জন্য লড়াই করিনি।”

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

নগরকান্দায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উদযাপনে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ: ‘আওয়ামী লীগের জুজুর ভয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’

নগরকান্দায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উদযাপনে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ: ‘আওয়ামী লীগের জুজুর ভয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আমরা পেরিয়ে এসেছি। আমরা সাম্যের রাজনীতি করি। ধর্মীয় সম্প্রীতির সাথে সকলে সমানভাবে নগরকান্দা-সালথার মাটিতে বসবাস করব। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ রাষ্ট্রীয় সকল বিষয়ে সকলে সমান সুবিধা পাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বিভিন্ন মত ও ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সকলেই বাংলাদেশের পতাকাতলে বাংলাদেশি পরিচয়ে থাকব। এর চেয়ে বড় পরিচয় আর নেই।’

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকালে ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার কেন্দ্রীয় কালী মন্দির চত্বরে উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের উদ্যোগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামা ওবায়েদ অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দুদের জমি দখল করা হয়েছে। পূজা মন্ডপে হামলা হয়েছে। বিশ্বজিৎকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো চেতনা ছিল না। তাদের একমাত্র চেতনা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করা। তারা হিন্দুদের জুজুর ভয় দেখিয়ে বলেছে, নৌকায় ভোট না দিলে হিন্দুরা এ দেশে থাকতে পারবে না। এই জুজুর ভয় থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি আপনাদের বোন হিসেবে সারা জীবন আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকব।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি কখনও কোনো মানুষের উপর নির্যাতন সমর্থন করে না। খুন-গুম সমর্থন করে না। আওয়ামী লীগ যাকে ইচ্ছা তাকে মেরেছে, খুন করেছে, গুম করেছে। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভাই-ভাই, বোন-বোন হয়ে থাকতে পারি। আজকের দিনে এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে।’

শামা ওবায়েদ আরও জানান, ‘গত ১৭ বছর আমরা নিষ্পেষিত হয়েছি। আমি প্রতি বছর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে আপনাদের অনুষ্ঠানে আসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যখনই চেষ্টা করেছি, তখনই এ এলাকার বিনা ভোটের এমপি পুলিশ দিয়ে আমার নেতাকর্মীদের এবং হিন্দু ভাই-বোনদের হয়রানি করেছে। আমি যাতে আসতে না পারি, আনন্দ ভাগাভাগি না করতে পারি, সেই চেষ্টা তারা করেছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অজয় কর, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মুকুল, নগরকান্দা উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের রনদা প্রসাদ এবং গোসাই দাস প্রমুখ।

জিয়া সাইবার ফোর্স অস্ট্রেলিয়া/ওশেনিয়া কমিটি গঠন: শিবলী আহ্বায়ক, বুলবুল সদস্য সচিব

জিয়া সাইবার ফোর্স অস্ট্রেলিয়া/ওশেনিয়া কমিটি গঠন: শিবলী আহ্বায়ক, বুলবুল সদস্য সচিব

জিয়া সাইবার ফোর্স (জেড সি এফ) অস্ট্রেলিয়া/ওশেনিয়া শাখার ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। গত ১৫ আগস্ট, ২০২৫-এ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মোঃ শরিফুল ইসলাম শিবলীকে আহ্বায়ক এবং মোঃ বাদশা বুলবুলকে সদস্য সচিব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জিয়া সাইবার ফোর্সের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ওয়াহিদ-উন-নবী, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.), চেয়ারম্যান নাসিফ ওয়াহিদ ফাইজাল এবং মহাসচিব সফিকুল ইসলাম এই কমিটি অনুমোদন করেন।

কমিটিতে মেহেদী হাসান খান চৌধুরী শিশির (নিউজিল্যান্ড) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন শামসুল আরেফীন (ভিক্টোরিয়া), মাহমুদুল হাসান (নিউ সাউথ ওয়েলস), এবং ড. কামরুল ইসলাম (কুইন্সল্যান্ড)। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন আশিক মালেক বিপুল (ভিক্টোরিয়া), মো. মাহবুবুল আলম (নিউজিল্যান্ড), শাইরা আলম প্রিয়াঙ্কা (নিউজিল্যান্ড), নাজমুল হুদা সঞ্জু (তাসমানিয়া), এবং রাশেদ মিজান জুয়েল (নিউজিল্যান্ড)।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুল হক নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই কমিটি অস্ট্রেলিয়া/ওশেনিয়া অঞ্চলে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে দলের আদর্শ ছড়িয়ে দেবে।” তিনি উল্লেখ করেন, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৫০,০০০ বাংলাদেশি বসবাস করছেন, এবং জিয়া সাইবার ফোর্স তাদের সঙ্গে মিলে বিএনপির পক্ষে একটি শক্তিশালী সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান গড়ে তুলবে। তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই কমিটি মিথ্যা প্রচারণার মোকাবিলা, দেশের ইতিবাচক খবর প্রচার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের জন্য একটি শক্তিশালী প্রবাসী ভোটব্যাংক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এ এফ এম তাওহীদুল ইসলাম কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ডিজিটাল যুগে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমি বিশ্বাস করি, জিয়া সাইবার ফোর্স এই মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করবে এবং সঠিক তথ্য প্রচার করবে। এই কমিটি বাংলাদেশের স্বার্থে এবং বিএনপির লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, “তরুণ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটিকে অস্ট্রেলিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন। অনলাইনে বিএনপির বিরুদ্ধে চলমান নেগেটিভ প্রচারণা দলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে, জিয়া সাইবার ফোর্স অস্ট্রেলিয়া/ওশেনিয়া থেকে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণার মোকাবিলা এবং বিএনপির আদর্শ ও নেতৃত্বের পক্ষে সত্য তুলে ধরতে তারা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।”
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ ফেরদৌস অমি বলেন, “জিয়া সাইবার ফোর্সের নতুন কমিটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির আন্দোলন ও অনলাইন প্রচারণায় সক্রিয়। এই কমিটির অনুমোদন তাদের আরও উৎসাহিত করবে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে, ধানের শীষের জন্য একটি শক্তিশালী প্রবাসী ভোটব্যাংক গঠনে জিয়া সাইবার ফোর্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”