বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, “ভোটকেন্দ্র আবার ভোটারের পদধ্বনিতে মুখর হবে, এটাই আমরা চাই। তাহলে ভোট কেন পেছাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে কথা উঠছে কেন? এটা গোটা জাতির প্রশ্ন। নিশ্চয় ভেতরে ভেতরে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।”
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষক দল আয়োজিত এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্য নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
সংস্কার ও নির্বাচনের দাবি
রিজভী বলেন, “আমরা সংস্কার চাই। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, একটা নির্দিষ্ট সময় বলে দিন, বেশি প্রলম্বিত করবেন না।” তিনি উল্লেখ করেন, লন্ডনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যুক্ত বিবৃতি দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি এনেছিল। কিন্তু তারপরই সারা দেশে সংঘাত ও রক্তাক্ত পরিস্থিতি শুরু হয়েছে, যা কিছু মহল চাইছে না বলে তিনি মনে করেন।
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের নিন্দা
মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির তীব্র নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, “এ ঘটনায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিবৃতিসহ নিন্দা জানানো হয়েছে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, তারা যেখানেই থাকুক।” তিনি আরও বলেন, দলের নামে চাঁদাবাজি বা অন্যায় করলে সাংগঠনিক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, যেমন বহিষ্কার বা পদ স্থগিত করা, এমনকি পুলিশের কাছে মামলা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান
রিজভী অভিযোগ করেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও সামাজিক মাধ্যমে আজেবাজে কথাবার্তা বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “তারেক রহমানকে ছাদ থেকে ফেলে কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেই শেখ হাসিনার নিপীড়নের শিকার। ১৭-১৮ বছর ধরে লন্ডনে থাকা এই নেতার বিরুদ্ধে মিছিল করা হচ্ছে, অথচ খুলনায় বিএনপির একজন যুবককে গুলি করে পায়ের রগ কেটে দেওয়া এবং কক্সবাজারে বিএনপি নেতা আব্দুর রহিমকে হত্যার বিষয়ে কোনো কথা বলা হচ্ছে না।”
খালেদা জিয়ার নিপীড়ন
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছয়-সাত বছর ধরে ভয়ংকর নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়াও কঠিন ছিল। গোটা জাতি যার প্রতি সহানুভূতিশীল, তার বিরুদ্ধেও কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হচ্ছে।
সরকারের দায়দায়িত্ব
রিজভী বলেন, যেকোনো হত্যাকাণ্ড বা রক্তপাতের জন্য সরকার ও প্রশাসন দায়ী, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হচ্ছে না। তিনি তারেক রহমানকে সাহস ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “তিনি ছয়-সাত বছরের নেতৃত্বে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছেন।”
প্রতিবাদ সমাবেশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও স্লোগানের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে কৃষক দল।