সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

তারেক রহমান: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি

 বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের জনগণের ঐক্য চাইলে কোনোভাবেই সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচনপদ্ধতি চালু করা উচিত নয়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তন করা মানে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদ, ফ্যাসিবাদ ও চরমপন্থার পথ তৈরি করে দেওয়া। এর ফলে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং সরকার অস্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।”

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে পেশাজীবীদের অবদান নিয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান আরও বলেন, “কয়েকটি রাজনৈতিক দল হঠাত করেই পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু এই পদ্ধতি দেশ ও জনগণের স্বার্থের জন্য উপযোগী নয়।” তিনি অভিযোগ করেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘাড়ে বন্দুক রেখে যারা নিজেদের ফায়দা হাসিল করতে চায়, তারাই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি করছে।”

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবার ও নির্যাতনের শিকার পেশাজীবীদের সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে পেশাজীবী’ শীর্ষক একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন এবং গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে পেশাজীবীদের ভূমিকা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

বক্তব্যের শুরুতে তারেক রহমান উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন। তিনি বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিহতদের পরিবার ও আহতদের চিকিতসায় সহায়তার নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব কুক্ষিগত করার জন্য অনেকে ততপর। শহীদদের তালিকা তৈরিতে এই ততপরতা থাকলে এতদিনে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হতো। প্রায় এক বছর হতে চললেও এটি না হওয়া দুঃখজনক।” তিনি জানান, বিএনপি

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী ও জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আখতার হোসেন খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য লুতফর রহমান, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক সায়মা ফেরদৌস, লে. কর্নেল (অব.) কামরুজ্জামান, সাবেক এনএসআই ডিজি আবদুর রহিমের ছেলে আবরার রহিম, শহীদ সাংবাদিক সাগর-রুনির ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ, এবং গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের মা শাহিনা বেগম।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও উত্তরার বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে তারেক রহমানের পরামর্শে তিনি অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চলে যান।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.