প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, রাত পৌনে ১২টার দিকে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এক যুবককে পুলিশের হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে নিতে চকবাজার থানায় যায়। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ করলে থানা প্রাঙ্গণে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে উভয় পক্ষ রাস্তায় অবস্থান নেয়। এরপর দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ সময় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে।
ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা চকবাজার থানা, গুলজার মোড় এবং প্যারেড মাঠের আশপাশে অবস্থান নিয়েছিল। পুলিশ উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা চালায় এবং একপর্যায়ে তারা এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহসিন কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের এক কর্মী আরিফকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। আরিফ ছাত্রলীগের দখলে থাকা সময়ে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পটপরিবর্তনের পরও তিনি এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার রাতে তাকে চকবাজার এলাকায় পেয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তাকে নিজেদের কর্মী দাবি করে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে যায়, যার প্রতিবাদ করেছি আমরা।”
অন্যদিকে, ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের ফেসবুক পেজে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে, চকবাজার এলাকায় ছাত্রদল ও যুবদলের চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ২২ জন আহত হয়েছেন। তারা আরও জানায়, সম্প্রতি বহিষ্কৃত যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশার অনুসারীরা চকবাজারে ভ্যানগাড়ি থেকে চাঁদাবাজি করতে গেলে আরিফ স্থানীয়দের নিয়ে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর জেরে বাদশার অনুসারীরা আরিফকে একা পেয়ে ‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে থানায় নিয়ে যায়। আরিফকে ছাড়াতে গেলে বাদশার নেতৃত্বে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভারী ও দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মহসিন কলেজের এক শিক্ষার্থী আরিফকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সোমবার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাকে ছাড়িয়ে আনতে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা থানায় গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত দুইটা পর্যন্ত চকবাজার এলাকায় উভয় পক্ষ দুই দিকে অবস্থান নিয়েছিল।
নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা হওয়ার পর আমরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।”