বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫

জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জামায়াতের

 বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বর্তমান সরকারের প্রতি জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সনদের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বুধবার (৬ আগস্ট) মগবাজারের আলফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

জামায়াতে ইসলামীকে একটি নির্বাচনমুখী দল উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, “অতীতে সব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল। বর্তমানে সারা দেশে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তার আইনি ভিত্তি দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অতীতে বিভিন্ন অভ্যুত্থান ও আন্দোলনের পর তাদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার নজির রয়েছে। যেমন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর লিগাল ফ্রেমওয়ার্কের ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত গণপরিষদে ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুমোদিত হয়। একইভাবে, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকালে গণভোট ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়, যা পরবর্তী সংসদে অনুমোদিত হয়।”

ডা. তাহের প্রশ্ন রেখে বলেন, “১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখার ভিত্তিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও আইনি ভিত্তি না থাকায় অন্যান্য বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি। এত নজির থাকার পরও জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি দিতে বাধা কোথায়?”

তিনি আরও বলেন, “আসন্ন নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন সম্পন্ন করে অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি দেওয়া না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ব্যর্থ হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সরকার ও প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের সব স্তরে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।”

সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। শহীদ ও আহতদের পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে নতুন করে উৎকণ্ঠা দেখা দিচ্ছে। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের রূপরেখা জাতির কাছে অস্পষ্ট। তাই আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্রে জনআকাঙ্ক্ষার অপরিহার্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়ন করা হোক।”


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.