লেখক-গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরউদ্দিন উমর বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী শক্তির প্রভাব বেড়েছে। তিনি মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের কথাবার্তায় শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতি মানুষের বিষয় উঠে আসছে না। তিনি বলেন, “যে রাজনৈতিক দলগুলো এখন সামনে এসেছে, তাদের কারও মুখে শ্রমিক-কৃষকের কথা শোনা যাচ্ছে না। এটি একদিকে হাস্যকর, অন্যদিকে দুঃখজনক। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপিকে মনে হচ্ছে সবচেয়ে প্রগতিশীল। তারাই কিছু কথাবার্তা বলছে। অন্যান্য শক্তিগুলোকে প্রগতিশীল বলা যায় না।”
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সংস্কার নয়, জনগণের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে শ্রমিক-কৃষকের গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক প্রস্তুতি নিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল এই সভার আয়োজন করে।
সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল এবং পূর্বাঞ্চলের নেতা ভুলন ভৌমিক বক্তব্য রাখেন।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বদরউদ্দিন উমর বলেন, “জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্রদের কৃতিত্বে ইতিহাসের সবচেয়ে নির্যাতনকারী ও গণবিরোধী শক্তির পতন হলেও এই অভ্যুত্থান শ্রেণি-শাসনের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। অনেকে এটাকে তৃতীয় স্বাধীনতা বা বিপ্লব ভেবেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে এটি কোনো সমাজ বিপ্লব নয়, শ্রেণি শাসন বা শাসন কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। অভ্যুত্থানের পর দক্ষিণপন্থী শক্তির প্রভাব বেড়েছে, এমনকি ধর্মীয় প্রভাবও বৃদ্ধি পেয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের নির্যাতন ও গণবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ছিল। এটি মানুষকে আলোড়িত করেছে। কিন্তু বামপন্থী শক্তি এই সুযোগে সামনে আসতে পারেনি। বামপন্থী দলগুলোর কোনো ভূমিকা এখানে নেই। বর্তমানে রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী ও ধর্মীয় শক্তির প্রভাবই প্রকট।”