প্রত্যক্ষদর্শী বাদশা হাওলাদার প্রথম আলোকে জানান, “রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাড়ি নিয়ে এই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিছু লোক গাছ ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করছিল। তারা আমাকে ভয় দেখিয়ে সরে যেতে বলে। কিছুদূর গিয়ে আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই।”
স্থানীয় সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন এবং গাছ, পাটকাঠি ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেন। তারা শেখ হাসিনা, শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থনে স্লোগান দেন। ঘটনার পর শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ স্টুডেন্টস লীগের ফেসবুক পেজে এই অবরোধের ভিডিও পোস্ট করা হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস লীগের পেজ ভেরিফায়েড।
নশাসন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুজ্জামান হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, “রাতের আঁধারে একটি দুর্বৃত্ত চক্র সড়কে গাছ ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা করে। আমরা বিএনপির নেতা-কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে তাদের ধাওয়া করে সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করি।”
বিএনপি নেতারা জানান, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর জাজিরায় সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদারের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করেছিল। এরপর তারা আর প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি, তবে রাতের আঁধারে মশাল মিছিল, পোস্টার সাঁটানো ও বিক্ষোভ মিছিলের মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির প্রথম আলোকে বলেন, “নিষিদ্ধ ও পলাতক সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী ও সমর্থক রাতের আঁধারে ঝটিকা মিছিল ও সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এমন কাজ করে আসছে। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসন এটি বন্ধে তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা ছাত্র-জনতা মিলে এই সব অনৈতিক ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কার্যক্রম প্রতিহত করব।”
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন মোল্লা প্রথম আলোকে জানান, “রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ একটি সংগঠনের পক্ষে স্লোগান দিয়ে কিছু লোক সড়কে গাছ ফেলে অবরোধের চেষ্টা করেছিল। স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করেছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”