এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই কর্মসূচি ঘিরে সারা দেশে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। কিছু মহল অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করলেও জনগণ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। আমরা আশা করছি, নেত্রকোনার এই কর্মসূচিতেও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবেন।”
কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক প্রীতম সোহাগ জানান, রোববার সকাল ১০টায় জেলা শহরে পদযাত্রা শুরু হবে, যা মুক্তারপাড়া এলাকার পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, ডা. তাসনিম জারাসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। তিনি নেত্রকোনাবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
দলীয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজারে এনসিপির সমাবেশে অপ্রীতিকর ঘটনার পর থেকে দলটির কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। নেত্রকোনায় আগামীকালের সমাবেশে প্রায় ৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে, যার মধ্যে ৬৬ জন বাইরে থেকে আনা হচ্ছে। নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠান জানান, “সমাবেশ ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করব যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।”
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রথমবারের মতো নেত্রকোনায় আগমন ও এই কর্মসূচির সার্বিক বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং এটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এনসিপির এই কর্মসূচি নেত্রকোনায় ব্যাপক উতসাহ সৃষ্টি করেছে। তবে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ লাইনস স্কুল দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু সমালোচনা দেখা দিয়েছে। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান এই বিষয়ে বলেন, “স্কুল বন্ধের বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থানের জন্য নয়। এটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। স্কুল যথারীতি চলবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ছাত্র-নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচিত। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ তাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে পালিত হচ্ছে।