বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম আল কায়ছারীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে পেশাগত অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা ও পৌর জামায়াত নেতারা জরুরি সভায় বসেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম আল কায়ছারী বলেন, “আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। যদিও সরাসরি নিশ্চিত তথ্য পাইনি, তবু যেহেতু জেলা আইনজীবী সমিতি তার সদস্যপদ স্থগিত করেছে, তাই আমরাও একই পদক্ষেপ নিয়েছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে কলাপাড়ায় একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার (মামলা নং ২৬১/২৫) আসামির জামিনের জন্য বিচারক নীলুফার শিরিনের বাসায় ৫০ হাজার টাকা সংবলিত একটি খাম ও মামলার নথিপত্র পাঠান রুহুল আমিন। এ ঘটনায় বিচারক নিজেকে অপমানিত বোধ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, এর আগেও একই মামলার এক আসামির জামিনের জন্য রুহুল আমিন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এবার সরাসরি ঘুষ পাঠানোয় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে বাধ্য হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রুহুল আমিন পূর্বেও বিভিন্ন মামলায় আসামিপক্ষের পক্ষে তদবির করেছেন এবং আদালতের আদেশ প্রত্যাশামতো না হলে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে, আলোচিত ‘জুলাই শহীদ জসিম কন্যা লামিয়া ধর্ষণ মামলা’ (মামলা নং ৩৭/২৫)-এ তিনি আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা আহ্বান করে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রুহুল আমিনের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয় এবং তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। সমিতির লিখিত সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), আইন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “আমি পাবলিক প্রসিকিউটর হওয়ার পর থেকেই নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”