শুক্রবার (৮ আগস্ট) কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লেখা এক দরখাস্তে উমামা ফাতেমা এই দাবি জানান। তিনি দরখাস্তে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসন থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছিল যে, কবি সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির ও বাংলাদেশ ছাত্র সমাজের (বাগছাস) মতো সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে। তবে তিনি বামপন্থি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, যদিও হলে এই সংগঠনগুলোর উপস্থিতি এবং কিছু ক্ষেত্রে কমিটিও রয়েছে।
এদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে, যা নিয়ে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। গত বছরের ১৭ জুলাই হলে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর মধ্যে ছাত্রদলের এই কমিটি ঘোষণা হলো হলে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সংগঠনের প্রথম কমিটি গঠনের ঘটনা।
উমামা ফাতেমা তার দরখাস্তে লেখেন, “গত এক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের এই চুক্তি বলবৎ ছিল। কিন্তু কতিপয় সংগঠন গোপনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আজ সকালে ছাত্রদল হলে সাত সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করেছে, যা জুলাই আন্দোলনের চুক্তি ভঙ্গের শামিল এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা।” তিনি এক ফেসবুক পোস্টে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শুক্রবার রাতের মধ্যে তা স্থগিত করার আল্টিমেটাম দেন এবং হুঁশিয়ারি দেন যে, এটি না হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় হলে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক কমিটি গঠন করে বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন। গত ২৬ মে তারা ১৪ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে। এ নিয়ে এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হামজা মাহবুব ফেসবুক গ্রুপে লেখেন, “উমামা ফাতেমা হলে বাম রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনো রাজনীতি চান না। এটা কেমন কথা? হল ও একাডেমিক এলাকায় সবাই রাজনীতির বিরুদ্ধে, আর উনি শুধু বাম রাজনীতি ছাড়া বাকি সব রাজনীতির বিরুদ্ধে। এটা স্পষ্ট পক্ষপাতিত্ব।”
এ ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক চলছে। প্রশাসন এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত বা বক্তব্য প্রকাশ করেনি।