রিজভী বলেন, “২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ভারতে গিয়েছিলেন। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছেন, ভারতের অনুমতি ছাড়া কিছু বলতে পারবেন না। এটাই জাতীয় পার্টির চরিত্র। তারা কি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, নাকি ভারতের কোনো দল? এটাই কি তাদের মেরুদণ্ড, নীতি ও আদর্শ?”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি কোনো মব সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নয়। কে রাজনীতি করবে বা করবে না, সেটা আইন ও সরকারের বিষয়। বিএনপি কখনো উশৃঙ্খল জনতাতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তবে গত ১৬ বছরে জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দলের ভূমিকা আমরা বিশ্লেষণ করেছি। শেখ হাসিনার রক্তপিপাসু ফ্যাসিবাদকে কারা রক্ষা করেছে? কারা লক্ষ কোটি টাকা পাচারের সুযোগ করে দিয়েছে? কারা দেশে স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করেছে? এর মধ্যে জাতীয় পার্টি অন্যতম।”
রিজভী অভিযোগ করেন, “২০০৮-০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা দুই বছরের কুলিং টাইম দিয়েছিলেন, তারপর নির্যাতন শুরু করেছেন। বিএনপি কখনো নির্যাতনে বিশ্বাস করে না। আমরা নিজেরাই নির্যাতিত, আমাদের নেতাকর্মীরা ৫০ থেকে ৫০০ মামলায় আক্রান্ত। আমরা চাই না অন্য কেউ লাঞ্ছিত হোক। তবে যারা ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণ দেখতে চায়।”
জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীর একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টির দায় বিএনপিকে নিতে হবে। বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই, সুষ্ঠু নির্বাচনও হয়নি। তাহলে কোন দায়ের কথা বলছেন? ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা শুনেছি জাতীয় পার্টির সঙ্গে গোলমাল হয়েছে। কিন্তু লাল শার্ট পরা যে ব্যক্তি হামলা করেছে, সে কে? গণতন্ত্রে সমালোচনা করা স্বাভাবিক। কিন্তু জাতীয় পার্টি যখন ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরু গুম হলো, তখন কোথায় ছিল?”
তিনি আরও বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার ছিল না, কুকুর-বিড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছিল। জাতীয় পার্টি তখন নির্বাচনে গেছে। ২০১৮ সালে বিএনপির ৪৫ জন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হলো। শেখ হাসিনা বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ চায়নি। তখন জাতীয় পার্টির ভূমিকা কী ছিল?”
গণমাধ্যমের প্রতি রিজভী বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি শহীদ হয়েছেন। কিন্তু অনেক গণমাধ্যম তার নামের আগে ‘শহীদ’ না লিখে ‘প্রয়াত’ ব্যবহার করে। শেখ হাসিনার আমলে বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কারও কথা বলতে পারতেন? ১৫ আগস্ট নিয়ে বড় বড় শিরোনাম করেছেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানকে শহীদ বা স্বাধীনতার ঘোষক বলতে সংকোচ কেন? এই আচরণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিচ্ছেন।”
আলোচনা সভায় উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরীসহ আরও অনেকে।