বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

গোলাম মাওলা রনির দ্বিতীয় বিয়ের কেলেঙ্কারি: সম্পত্তির লোভে প্রতারণার অভিযোগ, অডিও ফাঁসে তোলপাড়

পটুয়াখালী-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের একটি ভিডিওবার্তায় রনির বিরুদ্ধে সম্পত্তির লোভে দুই সন্তানের মাকে প্রতারণা করে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ফারজানা আফরোজ নামে এক নারীর সঙ্গে রনির কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও ফাঁস করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা যায়নি, এবং রনির পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।


ইলিয়াস হোসেনের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, রনি ২০০৯ সাল থেকে ফারজানার পেছনে লেগেছিলেন। ২০১৮ সালে তাকে তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন, এবং ২০২২ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ফারজানার কাছে সম্পত্তি দাবি করেন রনি, কিন্তু না পেয়ে সম্প্রতি তাকে তালাক দিয়েছেন। ফারজানার বক্তব্য অনুসারে, রনি তাকে বারবার বিয়ের প্রস্তাব দিতেন, যদিও তিনি স্বামী থাকা সত্ত্বেও। ফারজানা বলেন, “রনি আমাকে কখনো প্রেমের অফার করেনি, কিন্তু বিয়ে করতে চাইত। আমি বলতাম, আমার স্বামী আছে, আমি ভালো আছি।” পরে তারা হোটেল রেডিসনে বিয়ে করেন, কিন্তু রনির পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে তিনি এড়িয়ে যান।


ফারজানা আরও অভিযোগ করেন, রনির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ‘অরুণাপল্লী’ নামে একটি বিলাসবহুল বাড়ি তার জন্য বানানো হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন রনি। কিন্তু বিয়ের পর তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা সেখানে গিয়ে রাগারাগি করে চলে আসেন। দেড় মাস আগে ফারজানা রনির অফিসে গেলে তাকে বেরিয়ে যেতে বলেন এবং পুলিশ ডাকার হুমকি দেন। পুলিশ এলে রনি দাবি করেন, ফারজানা তাকে হিপনোটাইজ করে চট্টগ্রাম নিয়ে গিয়ে বিয়ে করিয়েছেন, এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। ফারজানা এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “তুমি সাত বছরের বাচ্চা? আমি তোমাকে হিপনোটাইজ করেছি?” পরে পুলিশের সামনে ঘটনা খুলে বললে রনিকে বোঝানো হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেন।


ইলিয়াস হোসেনের ভিডিওতে আরও বলা হয়, ফারজানার কোনো ভাই নেই, মা-বাবা নেই, এবং তার বোনেরা আমেরিকায় থাকেন। ফারজানা দেশে থেকে তাদের সম্পত্তি দেখাশোনা করেন, এবং রনি এই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই এসব করেছেন। ইলিয়াসের ফেসবুক পোস্টে রনিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফারজানাকে ডিভোর্স না করলে আরও তথ্য ফাঁসের হুমকি দেওয়া হয়েছে।


তবে এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। কয়েকটি ইউটিউব ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, ইলিয়াস হোসেন রনিকে ছোট করতে গিয়ে উলটো তার ভালো মানুষ হওয়া প্রমাণিত হয়েছে। অন্য এক ভিডিওতে রনির পক্ষ থেকে ইলিয়াসকে অনৈতিক আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে, এবং এর ফলে রনি কী পুরস্কার পেলেন তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরেকটি ভিডিওতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন এমন নোংরামি চলছে রনি ও ইলিয়াসের মধ্যে। মিডিয়া সূত্রগুলোতে এ অভিযোগগুলোকে একপক্ষীয় বলে মনে করা হচ্ছে, এবং সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।


গোলাম মাওলা রনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব থাকলেও এ অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। ঘটনার তদন্তের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে, এবং এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে প্রভাব ফেলতে পারে। আরও তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের প্রতিক্রিয়া অপেক্ষা করা হচ্ছে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.